গুগলে দ্রুত পোস্ট ইনডেক্স করার উপায় সমূহ
আপনি কি চান যে আপনার ওয়েবসাইটটি খুব দ্রুততার সাথে গুগলে ইনডেক্স হোক?
আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন।
আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা! আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি মেহেদী হাসান একজন এসইও এক্সপার্ট, এবং ব্লগার। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের জানাব কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনার ওয়েবসাইটটি খুব দ্রুততার সাথে সম্পূর্ণরূপে গুগলে ইনডেক্স হবে।
বর্তমানে ইন্টারনেটে হাজার হাজার ওয়েব পেজ রয়েছে এবং এদের ইনডেক্স করার জন্য গুগোল ও বিভিন্ন ধরনের স্পাইডার/ক্রাউলার ব্যবহার করে থাকে। তবে একটি পেজ গুগলে ইনডেক্স হতে হলে কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এবং কিছু নীতিমালা আছে যেগুলো পুড়ন করার মাধ্যমেই শুধুমাত্র গুগোল পেজ ইনডেক্স হয়।
একটা সময় ছিল যখন গুগোল যেকোন পোষ্টকেই ইন্ডেক্স করত। কিন্তু, বর্তমান সময়ে গুগোল শুধুমাত্র সেই সকল পোস্ট গুলোকেই ইনডেক্স করছে, যেগুলো তার কাছে মানসম্মত মনে হয় এবং গুগল আশা রাখে যে এই পোস্ট গুলোর মাধ্যমে তার ব্যবহারকারীরা উপকৃত হবে।
গুগল সাইট ইনডেক্স হওয়া কেন জরুরী
এক কথায় যদি বলতে হয় তাহলে বলব, আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলের সার্চ রেজাল্ট পেজে দেখতে চান। তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটি অবশ্যই গুগলে ইন্ডেক্স হওয়া জরুরী একটি বিষয়। কেননা যে সাইট গুগলে ইনডেক্স থাকেনা সে সাইট কখনোই গুগলের সার্চ রেজাল্ট দেখায় না।
একজন ওয়েবসাইটের মালিক অথবা একজন কনটেন্ট মার্কেটের হিসেবে আমরা সকলেই চাই যে গুগল আমাদের ওয়েবসাইটকে ইন্ডেক্স করুক। এবং আমরা যদি আমাদের সাইটে কোন ধরনের পরিবর্তন করি তাহলে সেটা রি-ইনডেক্স করার মাধ্যমে হালনাগাদ করুক।
আর গুগলের এই ইন্ডেক্স করার পদ্ধতিটাই হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট গুগোল এ র্যাঙ্ক করার সর্বপ্রথম ধাপ। এবং এই ধরনের কিছু ছোট ছোট ধাপ সম্পন্ন করেই আমরা আমাদের ওয়েবসাইটকে গুগলের প্রথম পাতায় র্যাঙ্ক করতে সক্ষম হই।
এবং একটি ওয়েবসাইট যখন গুগলের প্রথম পাতায় র্যাঙ্ক করে কেবলমাত্র তখনই গুগল থেকে প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিক পেয়ে থাকে। আর আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে যতবেশি ট্রাফিক আনতে সক্ষম হব ঠিক ততটাই আমাদের উপার্জনকে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হব।
সুতরাং, আপনি বুঝতেই পারছেন যে একটি ওয়েবসাইট গুগল ইনডেক্স হওয়া কতটা জরুরি একটা বিষয়।
গুগলে পেজ ইন্ডেক্স হওয়া যে সকল বিষয়ের উপর নির্ভর করে
একটি সার্চ ইঞ্জিনে পেজ ইন্ডেক্স হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সময় সাপেক্ষ কাজ। আর এই কাজটি সম্পন্ন করতে গুগোল সহ প্রায় প্রত্যেকটি সার্চ ইঞ্জিন কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
প্রায় প্রতিনিয়তই ইন্টারনেটে হাজার হাজার পেজ তৈরি হচ্ছে। এবং এসকল পেজকে একটি সার্চ ইঞ্জিন ইনডেক্স করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রাউলার ব্যবহার করে থাকে। সুতরাং, আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটটি কে ইনডেক্স করতে চান। তাহলে তাহলে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটের ইউ আর এল গুগলের মত সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে দিতে হবে।
অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের মতই গুগলেরও সার্চ কনসোল নামক একটি নির্দিষ্ট পরিষেবা আছে। যার মাধ্যমে একজন ওয়েবসাইটের মালিক চাইলে তার ওয়েবসাইটের সমস্ত লিংক গুগলের কাছে জমা দিতে পারে। এবং গুগল সেই লিঙ্ক গুলো ব্যবহার করে ওয়েবসাইটটি ক্রাউল করে সেটি বিচার-বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে তার ডাটাবেজে সংরক্ষন করে থাকে।
এছাড়াও আরও কয়েকটি নির্দিষ্ট বিষয় আছে। যেমন, গুগোল প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের মালিক কে স্বাধীনতা দিয়েছে। যে সে কোন পেজগুলি গুগলে ইনডেক্স করাতে চাচ্ছে। এবং কোন পেজগুলি করতে চাচ্ছে না তা একটি মেটা ট্যাগ এর মাধ্যমে গুগলকে জানিয়ে দিতে পারবে।
সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে যে গুগোল একটি পেজকে ইন্ডেক্স করবে কিনা তা অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। নিম্নে এ সকল বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
ওয়েবসাইটের বয়স
পেজ ইন্ডেক্স হওয়ার ব্যাপারে ওয়েবসাইটের বয়স খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই যে ওয়েবসাইট যতবেশি পুরনো হয় সে ওয়েবসাইট সম্পর্কে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে তত বেশি তথ্য থাকে। আর মূলত এই সকল তথ্য ব্যবহার করে একটি সার্চ ইঞ্জিন ওয়েবসাইটকে ক্রাউল করে। এবং প্রতি ওয়েবসাইটের পেজটি তার কাছে দরকারি মনে হয় মনে হয় তখন তা ইন্ডেক্স করে।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে একটি ওয়েবসাইট যদি একেবারে নতুন হয় তাহলে গুগোল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন সেই ওয়েবসাইটটিকে ইন্ডেক্স করতে কিছুটা সময় নিয়ে থাকে। কেননা একেবারে নতুন ওয়েবসাইট সম্পর্কে কোন তথ্য সার্চ ইঞ্জিনের কাছে থাকে না। তবে আমরা নির্দিষ্ট কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে আমাদের নতুন ওয়েবসাইটকেও গুগলে খুব সহজে ইনডেক্স করাতে পারবো। পোষ্টের পরবর্তী অংশে আমি এ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ওয়েবসাইটটি আগে থেকে গুগলে ইনডেক্স
গুগোল একটি পেজ অথবা পোস্ট ইন্ডেক্স হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি ভূমিকা রাখে তা হল একটি ওয়েবসাইট আগে থেকেই গুগল ইন্ডেক্স আছে কিনা। একটি ওয়েবসাইট সম্পূর্ণরূপে অথবা নির্দিষ্ট কয়েকটি পেজও যদি গুগলে ইনডেক্স থাকে তাহলে গুগলের সিডিউল অনুযায়ী পরবর্তীতে হালনাগাদ করার জন্য ক্রাউল করতে আসে।
এবং এই ক্রাউলিং প্রক্রিয়ায় যদি আপনার ওয়েবসাইটের ইন্ডেক্স না হওয়া পেজগুলির লিংক গুগলবট দেখতে পাই তাহলে সেগুলো ক্রাউল এবং ইন্ডেক্স হওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকে।
আপনার ওয়েবসাইটটি আগে থেকে গুগলে ইনডেক্স আছে কিনা, অথবা আপনার ওয়েবসাইটের কোন কোন পেজ গুগলে ইনডেক্স আছে তা জানতে site:yourdomain.com লিখে গুগলে সার্চ দিন। এখানে yourdomain.com এর জায়গায় আপনার ওয়েবসাইট এর ডোমেন নামটি দিন।
ইন্টার্নাল লিংকিং
আপনার ওয়েব পেজ সার্চ ইঞ্জিনে ইন্ডেক্স করা থেকে শুরু করে রেংক করা প্রয়োজন তো ইন্টার্নাল লিংকিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উপর সেকশনে যেমনটি বলেছিলাম, যদি আপনার ওয়েবসাইটের কোন পেজ গুগল আগে থেকেই ইনডেক্স করে থাকে। তাহলে, সেটি গুগল হালনাগাদ করার সময় অন্যান্য পোস্টের লিংক পেলে সেগুলোকেও ইনডেক্স করে নেয়।
সেইসাথে ইন্টার্নাল লিংকিং আপনার ওয়েবসাইটে গঠনকে গুগলের কাছে আরো ভালো ভাবে উপস্থাপন করে। এছাড়া সঠিক উপায়ে ইন্টারনাল লিনকিং ব্যবহার করলে আপনার আর্টিকেল আরও বেশি তথ্যবহুল হয়। যা ইনডেক্সিং প্রসেসকে আরো সহজ করে।
মেটা ট্যাগ এর ব্যবহার
সঠিকভাবে মেটা ট্যাগের ব্যবহার, আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ পারফরম্যান্সকে সামগ্রিকভাবে উন্নত করতে পারে। সেইসাথে মেটা ট্যাগের মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট পোষ্ট গুগলে ইনডেক্স হবে কি না সেটাও নির্ধারণ করে দিতে পারেন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে মেটা ট্যাগ বিভিন্নভাবে ব্যবহার থাকলেও মূলত এটি গুগোল বটের অনুমতি নির্ধারণ করার জন্য বেশি ব্যবহৃত হয়। গুগোল পেজ ইন্ডেক্সিং-এ মেটা ট্যাগ এর সঠিক ব্যবহার পোষ্টের পরবর্তী অংশে আলোচনা করা হলো।
সাইট ম্যাপ সাবমিট করা
সাইট ম্যাপ এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার ওয়েবসাইটের যে পেজগুলো গুগলে ইনডেক্স করাতে চান সে পেজ গুলোর লিংক এর একটি লিস্ট তৈরি করতে পারবেন। এবং গুগল সার্চ কনসোলের মাধ্যমে গুগোল বটের কাছে তা সাবমিট করতে পারবেন।
এর ফলে গুগোল আপনার ওয়েব সাইটের সকল পেজগুলিকে সহজেই ক্রাউল এবং ইন্ডেক্স করতে পারে। সুতরাং, আপনি বুঝতেই পারছেন যে আপনার ওয়েবসাইটের পোস্ট গুগলে ইনডেক্স হওয়ার ক্ষেত্রে সাইটম্যাপের গুরুত্ব কতটুকু।
robot.txt ফাইল এর সঠিক ব্যবহার
robots.txt ফাইল হলো এক ধরনের টেক্সট ফাইল যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের ব্যাপারে গুগোল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। যথাযথ উপায়ে robots.txt ফাইল এর ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইটের এসইওকে সামগ্রিকভাবে উন্নত করতে পারে।
মূলত robots.txt ফাইল এর প্রধান কাজ হলো আপনার ওয়েবসাইটের কোন ফাইলগুলো গুগোল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন ইন্ডেক্স করতে পারবে এবং কোন ফাইলগুলো ইন্ডেক্স করতে পারবে না,সেই বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া। সেইসাথে robots.txt ফাইলের মাধ্যমে আপনি ইনডেক্সিং-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এক্সএমএল সাইটম্যাপ এর অবস্থান জানিয়ে দিতে পারেন।
ওয়েবসাইট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা
গুগোল সর্বোপরি তার ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতার ওপর জোর দিয়ে থাকে। আর এই কারণে গুগোল যখন কোন ওয়েবসাইটকে ক্রাউল করে তখন সে বিভিন্ন পরীক্ষার নিরীক্ষার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করে যে এই ওয়েবসাইটটি একজন ব্যাবহারকারিকে সন্তুষ্ট করতে পারবে কি না।
এবং গুগলের কাছে যদি মনে হয় যে এই পেজটি ব্যবহারকারীকে একটি উন্নত অভিজ্ঞতা প্রদান করতে সক্ষম। শুধুমাত্র তখনই গুগোল সেই পেজটিকে ইন্ডেক্স করে নেয়। আজকের পোস্টের পরবর্তী অংশে কিভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা উন্নত করবেন সে সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
কনটেন্ট এবং সোর্সকোড এর অনুপাত
কনটেন্ট এবং সোর্সকোড এর অনুপাতের বিষয়টি অনেকের কাছে নতুন মনে হতে পারে এবং অনেকেই আছে যারা এই বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝতে পারেনা। তো আমি আপনাদের সুবিধার্থে বিষয়টি বুঝিয়ে বলছি। কনটেন্ট এবং সোর্সকোড এর অনুপাত হল আপনার ওয়েবসাইটে ঠিক কতটুকু পরিমাণে কনটেন্ট আছে এবং সেই ওয়েবসাইটটি তৈরি করতে কতটুকু কোড ব্যবহার করা হয়েছে তার একটি অনুপাত।
একজন এসইও এক্সপার্ট হিসেবে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে গুগলের কাছে শুধুমাত্র আপনার ওয়েব সাইটের কনটেন্ট এর মূল্য আছে। আপনার ওয়েবসাইটের পিছনে কতগুলো কোড আছে তা দিয়ে গুগলের কিছুই যায় আসে না। এবং আপনার কন্টাক্ট তুলনায় সোর্সকোড এর পরিমাণ যদি অত্যাধিক হয় তাহলে খুব স্বাভাবিকভাবেই গুগল তা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করবে।
সুতরাং, আপনার ওয়েবসাইটটি গুগলে ইনডেক্স করতে হলে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটের কোড এবং কনটেন্ট এর অনুপাত সুষম হতে হবে।
মোবাইল বান্ধব ওয়েবসাইট
বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে একটি ওয়েবসাইট মোবাইল বন্ধ হওয়া কতটা জরুরি। সেইসাথে গুগোল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো একটি মোবাইল বান্ধব ওয়েবসাইটকে শীর্ষে র্যাঙ্ক করানোর চেষ্টা করে।
বর্তমানে গুগোল একটি ওয়েবসাইট মোবাইল বান্ধব না হওয়াকে ত্রুটি হিসেবে গণ্য করে। তাই আপনি যদি চান যে আপনার ওয়েবসাইটটি গুগলে ইনডেক্স। এবং যথাযথভাবে তা র্যাঙ্ক করুক, তাহলে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল সহ অন্যান্য সকল যন্ত্রে সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে হবে।
ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম
গুগোল পেজ ইন্ডেক্সিং এ ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। বর্তমান সময়ে কেউই দেরিতে লোড নেয় এমন ওয়েবসাইটকে পছন্দ করেনা। সম্প্রতি গুগল অফিশিয়ালি ঘোষণা করেছে যে যে সকল ওয়েবসাইট দেরিতে লোড করে এসেই সফল ওয়েবসাইটকে গুগলের সার্চ রেজাল্টে পেজের উপরের দিকে দেখান হবে না।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে দেরীতে লোড নেয় এমন ওয়েবসাইটের গুরুত্ব গুগলের কাছে খুবই কম। আর এ কারণেই গুগোল নতুন সকল যেসব ওয়েবসাইটে আছে সেগুলোর লোডিং টাইম এর ওপর খুবই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট থেকে গুগলে ইনডেক্স করাতে চান তাহলে অবশ্যই সেটার লোডিং টাইম কমাতে হবে।
বন্ধুরা, এতক্ষণ আমরা একটি পোস্টে গুগলে ইনডেক্স হওয়া ঠিক কী কী বিষয়ের উপর নির্ভর করে তা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি উপরোক্ত বিষয়গুলো জানার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে ইনডেক্স হওয়ার জন্য আরো বেশি উপযুক্ত করে তুলতে পারবেন।
গুগলে পোস্ট ইনডেক্স করার ধাপসমূহ
পোষ্টের প্রথম অংশে আমরা জানার চেষ্টা করেছে গুগোল একটি পেজ ইন্ডেক্স হওয়া কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এবার আমরা জানার চেষ্টা করবো একটি নতুন ওয়েবসাইট অথবা পেজকে গুগলে ইনডেক্স করাতে হলে কি কি ধাপ অনুসরণ করতে হয়।
ওয়েবসাইট সার্চ কনসোলে এড করুন
একটি ওয়েবসাইট সম্পূর্ণরূপে তৈরি করার পর সর্বপ্রথম যে কাজটি করা উচিৎ তা হচ্ছে ওয়েবসাইটটিকে গুগল সার্চ কনসলে এড করার। গুগল সার্চ কনসোল এমন একটি পরিষেবা যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে ইনডেক্স করার জন্য তালিকাভুক্ত করতে পারবেন।
এছাড়াও গুগল সার্চ কনসোলের মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ পারফরম্যান্স সম্বন্ধে সম্পূর্ণ তথ্য পাবেন। এবং আপনার ওয়েবসাইটের কোন পেজগুলো গুগলে ইনডেক্স হয়েছে অথবা কোন পেজে ইনডেক্স সংক্রান্ত কোন সমস্যা আছে কিনা তাও গুগল সার্চ কনসোল এর মাধ্যমে জানতে পারবেন।
আপনার সাইটে গুগল সার্চ কনসলে অ্যাড করতে সর্বপ্রথম আপনাকে গুগল সার্চ কনসোলের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। যেহেতু গুগল সার্চ কনসোল একটি গুগল ভিত্তিক সেবা সুতরাং গুগল সার্চ কনসোল ব্যবহার করতে অবশ্যই আপনার একটি জিমেইল একাউন্ট থাকতে হবে।
গুগল সার্চ কনসলে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে এবং আপনার ওয়েবসাইটটি এড করতে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করুনঃ
ধাপ-১ঃ একটি ব্রাউজার থেকে গুগল সার্চ কনসলে ভিজিট করুন। সার্চ কনসোলে ভিজিট করলেই নিচে দেখানো পেজের মত একটি পেজ দেখতে পাবেন, সেখান থেকে স্টার্ট নও (Start Now) বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ-২ঃ স্টার্ট বাটনে ক্লিক করলে আপনাকে আপনার জিমেইল একাউন্টের মাধ্যমে লগইন করতে বলা হবে। এবার আপনার জিমেইল একাউন্ট এড্রেস এবং পাসওয়ার্ড এর মাধ্যমে লগিন করুন।
ধাপ-৪ঃ কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের মালিকানা নিশ্চিত করতে বলা হবে। আপনার ওয়েবসাইটটি যদি ব্লগারের চালিত হয় এবং আপনি যদি একই জিমেইল একাউন্টের মাধ্যমে ব্লগার ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে, তৎক্ষণাৎ আপনার ওয়েবসাইটের মালিকানা নিশ্চিত হয়ে যাবে।
অন্যথায়, আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস অথবা অন্যকোন সিএমএস এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করে থাকেন কি আপনার মালিকানা ম্যানুয়ালি নিশ্চিত করতে হবে।
অথবা, অন্যকোন সিএমএসএস জন্য মালিকানা নিশ্চিত করতে আপনার স্ক্রিনে যে মডালটি প্রদর্শিত হয়েছে সেখান থেকে যেকোনো একটি পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি আপনার মালিকানা নিশ্চিত করতে পারবেন। তবে আজকে আমরা সর্বপ্রথম পদ্ধতি এইচটিএমএল ফাইল এর মাধ্যমে মালিকানা নিশ্চিত করা দেখবো।
সর্বপ্রথম পদ্ধতি এইচটিএমএল ফাইল এর মাধ্যমে আপনার মালিকানা নিশ্চিত করতে প্রথমেই ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে এইচটিএমএল ফাইলটি ডাউনলোড করুন। এবার এই এইচটিএমএল ফাইলটি আপনার ওয়েব হোস্টিংয়ের যে ফোল্ডারে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করা আছে সেখানে আপলোড দিন। এবং সবশেষে ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে মালিকানা নিশ্চিত করুন।
সার্চ কনসোলে আপনার ওয়েবসাইটের মালিকানা নিশ্চিত করার সাথে সাথে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ কনসোল প্রপার্টিতে দেখতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটটি সংক্রান্ত তথ্য গুলো সার্চ কনসোলে প্রদর্শিত হতে প্রায় 24 ঘণ্টার মতো সময় নিতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে এটি 48 ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে।
তবে আপনি চাইলে এ সময়ে সাইটম্যাপ সাবমিট করার মতো অন্যান্য কাজগুলো সম্পাদন করতে পারবেন।
robots.txt ফাইল এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন
একটি সার্চ ইঞ্জিন বট একটি ওয়েবসাইটে আসলে সর্বপ্রথম robots.txt ফাইল থেকে দিকনির্দেশনা নেওয়ার চেষ্টা করে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে আপনার ওয়েবসাইটে একটি robots.txt ফাইল থাকা কতটা জরুরি।
আপনি যদি ব্লগার সিএমএস ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের robots.txt ফাইলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তৈরি হয়ে যাবে। তবে আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটটি ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে তৈরি করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি এসইও প্লাগিন ব্যবহার করার মাধ্যমে robots.txt ফাইলটি তৈরি করতে হবে।
সাধারনত আমরা যারা ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে থাকে তারা রেঙ্ক ম্যাথ বা ইউষ্ট এসইও প্লাগিন ব্যবহার করে থাকি। সাধারণত এই প্লাগিন গুলো ইন্সটল করে সেটআপ করে নিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি robots.txt ফাইল তৈরি হয়ে যায়।
আপনার ওয়েবসাইটের robots.txt ফাইল টি সঠিকভাবে তৈরি হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনার ওয়েবসাইটের ইউ আর এল এরপর একটি ফরওয়ার্ড স্ল্যাশ দিয়ে robots.txt লিখে ভিজিট করুন।
উদাহরণস্বরূপ আমাদের ওয়েবসাইটে robots.txt ফাইল এর ঠিকানাঃ
https://www.techmbr.xyz/robots.txt
উপরে দেখানোর "User-agent: *" এই লাইনটি অবশ্যই থাকতে হবে। এবং এর নিচে "Disallow: " এই লাইনটার মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে যে আপনি কোন ইউআরএল গুগলেকে ইনডেক্স হতে দেবেন না। এবং "Allow:" এই লাইনটার মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে যে সার্চ ইঞ্জিন বোটকে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কোন পেজগুলো ইনডেক্স করতে দেবেন।
সাইটম্যাপ তৈরি করে সাবমিট করুন
গুগোল ইনডেক্সিং এ robots.txt ফাইল এর পরে সবচাইতে বেশি যে জিনিসটা প্রভাব ফেলে তা হচ্ছে sitemap.xml ফাইল। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন robots.txt ফাইল এ সাইটম্যাপ নামক একটি লাইন আছে যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের সাইটম্যাপ লিংক দেওয়া আছে ।
তবে এর পেছনেও একটা কারণ আছে। আর তা হলো, যখন একটি সার্চিং ইঞ্জিন ইনডেক্স করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করে তখন সে সর্বপ্রথম robots.txt ফাইল ভিজিট করে সেখান থেকে sitemap.xml ফাইলটির লোকেশন জানার চেষ্টা করে। এবং এই sitemap.xml ফাইল থেকে লিংক নিয়েই গুগোল ইন্ডেক্স করে।
সাইটম্যাপ মূলত একটি এক্সএমএল ফাইল, যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের ইন্ডেক্স যোগ্য সকল লিংক একটি লিস্ট আকারে থাকে। এবং এই লিস্টকে গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন ইনডেক্স এর কাজে ব্যবহার করে থাকে।
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটটি ব্লগারের মাধ্যমে তৈরি করে থাকেন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের sitemap.xml ফাইলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তৈরি হয়ে যাবে। এবং আপনি চাইলেই আপনার ওয়েবসাইটের sitemap.xml ফাইলটি দেখতে পারবেন।
আপনার ওয়েবসাইটের sitemap.xml ফাইলটি দেখতে একটি ব্রাউজারের এড্রেসবারে https://www.(yoursite.com)/sitemap.xml লিখে ভিজিট করুন। উদাহরণসহ আমাদের ওয়েব সাইটের সাইটম্যাপ ইউআরএল হলোঃ
https://www.techmbr.xyz/sitemap.xml
তবে আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য sitemap.xml ফাইল তৈরি করতে একটি প্লাগিন ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি রেঙ্ক ম্যাথ অথবা ইউষ্ট এসইও এর মত প্লাগিন ব্যবহার করতে পারেন।
গুগল সার্চ কনসলে আপনার ওয়েবসাইটের sitemap.xml ফাইলটি সাবমিট করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুনঃ
ধাপ-২ঃ এবার আপনি আপনার স্ক্রিনে অ্যাড এ নিউ সাইটম্যাপ নামক একটি সেকশন দেখতে পাবেন। এখানে আপনার সাইটম্যাপের ইউআরএলটি দিন এবং সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
সঠিকভাবে সাইটম্যাপের ইউআরএল ইন্সটল করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই গুগোল তৎক্ষণাৎ আপনার ওয়েবসাইটের sitemap.xml স্ক্যান করবে এবং এতে কোন এরর আছে কিনা তা চেক করবে। সাইটম্যাপ এ যদি কোন ধরনের সমস্যা না থাকে তাহলে Sitemap has successfully submitted. এই লেখাটি দেখাবে।
সঠিকভাবে মেটা ট্যাগ ব্যবহার করুন
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে মেটা ট্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মেটা ট্যাগের মাধ্যমে আপনি একটি পেজ এর বিভিন্ন তথ্য সার্চ ইঞ্জিন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে তুলে ধরতে পারবেন।
বিভিন্ন ধরনের মেটা ট্যাগ হয়ে থাকে যেমন টাইটেল, ডেসক্রিপশন, কিওয়ার্ড, ল্যাঙ্গুয়েজ , রোবট ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারি থাকলেও আমরা আজকেরে পোস্টে ইন্ডেক্স সংক্রান্ত তথ্য প্রদানকারী রোবট মেটা ট্যাগ নিয়ে আলোচনা করব।
অন্যান্য মেটা ট্যাগের মতো রোবট মেটাট্যাগ এরও দুইটা অংশ থাকে। ট্যাগ এর ভেতর প্রথম অংশে name নামে একটি এট্রিবিউট থাকে যার ভ্যালু হিসেবে ব্যবহার করা হয় "robot"। এবং দ্বিতীয় অংশে content এট্রিবিউট থাকে যার ভ্যালু হিসাবে "index/noindex", "follow/nofollow" ইত্যাদি থাকে।
একটি ইন্ডেক্স যোগ্য পেজের রোবট মেটা ট্যাগ এর উদাহরণ নিম্নে দেওয়া হলঃ
<meta name="robots" content="follow, index" />
আপনার ওয়েবসাইটের রোবট মেটা ট্যাগ দেখার জন্য একটি ডেক্সটপ ব্রাউজার থেকে ওয়েব সাইটটি ভিজিট করুন। এবার আপনার ওয়েব সাইটের যে কোন ফাকা জায়গায় কার্সর রেখে মাউসের রাইট বাটনে ক্লিক করুন এবং ভিউ পেজ সোর্স নামক অপশনটিতে ক্লিক করুন ।
ভিউ পেজ সোর্স এ ক্লিক করলেই আপনার ওয়েবসাইটের সোর্সকোড একটি নতুন ট্যাবে ওপেন হয়ে যাবে। সেখানে গিয়ে ওয়েবসাইটের হেড ট্যাগের ভিতরে নিচে দেখানো ট্যাগ এর মত একটি ট্যাগ দেখতে পাবেন।
তবে আপনার ওয়েবসাইটে যদি ব্লগারই হয়ে থাকে তাহলে খুব সম্ভবত আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সোর্সকোড এ কোন ধরনের রোবট মেটা ট্যাগ দেখতে পাবেন না।
মেটা ট্যাগ না থাকলেও কোন সমস্যা নেই তবে একটা জিনিস অবশ্যই নিশ্চিত করবেন। যে যদি আপনার ওয়েবসাইটের রোবট মেটা ট্যাগ থাকে তাহলে তার content এট্রিবিউট এর ভ্যালু যাতে "noindex, nofollow, nodp, nosnipet, noimageindex" না থাকে।
তথ্যবহুল পোস্ট লিখুন
একটি পোস্টকে তথ্য বল হওয়া খুবই জরুরী । কেননা একজন ভিজিটর যখন আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে তখন সে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে জানার জন্যেই প্রবেশ করবে।
সুতরাং আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে ভিজিটর আপনার পোস্টটি কি উদ্দেশ্যে পড়তে আসবে এবং আপনি প্রশ্নের মাধ্যমে কি তার চাহিদা পূরণ করতে পারছেন কিনা।
আর বর্তমানে গুগোল এ বিষয়টা খুবই ভালভাবে বলছে যে কোন পোস্ট তথ্য বহুল এবং কোনটি তথ্য হেল্প পোস্ট। এবং গুগল কখনও একটি তথ্যহীন পোস্টকে ইন্ডেক্স করতে চাইবেনা।
নিয়মিত পোষ্ট পাবলিশ করুন
নিয়মিত পোস্ট পাবলিশ করা গুগোল ইন্ডেক্স এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা সকলেই জানি একটি ওয়েবসাইটকে ইনটেক্স করতে হলে সেই পেজটি গুগলবট দ্বারা ক্রাউল হতে হবে। এবং গুগলবট একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ওয়েবসাইটকে ক্রাউল করে থাকে।
তবে আপনি যদি গুগোল বটের ক্রাউলিং রেট বাড়াতে পারেন তাহলে খুব সহজেই আপনার সাইট এর নতুন পেজ গুলি ইন্ডেক্স করাতে পারবেন।
গুগোল বটের ক্রাউলিং রেট বৃদ্ধি করতে নিয়মিত পোস্ট করার কোনো বিকল্প নেই। আপনি যদি সপ্তাহের সাতটি পোষ্ট পাবলিশ করে থাকেন তাহলে একদিনে দুইটা তিনটা পাবলিশ না করে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি করে পোস্ট পাবলিশ করার চেষ্টা করুন।
অথবা আপনি যদি সপ্তাহে তিন থেকে চারটি পোস্ট করে থাকেন, তাহলে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর পোস্ট করার চেষ্টা করবেন। কখনো একসাথে একের অধিক পোস্ট পাবলিশ করবেন না।
যথাযথ ইন্টার্নাল লিংক তৈরি করা
একটি ওয়েবসাইট ইন্ডেক্সিং থেকে শুরু করে রেংকিং পর্যন্ত ইন্টারনাল লিংক এর গুরুত্ব অপরিসীম। ইন্টারনাল লিংকিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার একটি পোস্টের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি পোষ্টের লিংক দিতে পারেন।
গুগোল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে যে পেজের ইন্টারনাল লিংক যত বেশি তার গুরুত্বও ততবেশি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ইন্টার্নাল লিনকিং গুগোল ইন্ডেক্সড প্রভাব ফেলতে পারে।
আপনার চেয়ে পেজটি এখনো ইন্ডেক্স হয়নি সে পেজে অন্যান্য পেজ থেকে ইন্টারনাল লিংক দেওয়ার মাধ্যমে সহজেই সেই পেজটিকে গুগলে ইনডেক্স করাতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার সদ্য লেখা আর্টিকেলটি শেয়ার করার মাধ্যমে খুব সহজেই তাৎক্ষণিক কিছু ভিজিটর পেয়ে যাবেন। সেইসাথে গুগলের ও আপনার ওয়েবসাইটের নতুন পেস্ট পেয়ে যাবার একটি সম্ভাবনা থাকে।
এবং গুগল যদি আপনার ওয়েবসাইটে সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে প্রবেশ করার পর দেখে যে পেজটি একটি দরকারি পেজ তাহলে সে তৎক্ষণাৎ এটিকে ইনডেক্স করে। সুতরাং, আপনার ওয়েবসাইটের নতুন পোস্টকে দ্রুত গুগলে ইনডেক্স করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।
ব্যাকলিংক তৈরী করুন
এসইও এর ক্ষেত্রে ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একজন ব্লগার হিসেবে সবসময় তথ্যবহুল কনটেন্ট লেখার মাধ্যমে ভালোমানের ব্লগ সাইট থেকে ব্যাকলিংক নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
গুগল যখন একটি ভাল মানের ব্লগ সাইটে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দেখতে পাবে তখন সে সেই লিংকের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করবে এবং ইনডেক্স করবে।
মোবাইল বান্ধব থিম ব্যবহার করুন
মোবাইল প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এই বিষয়ে খেয়াল রেখেই গুগল বর্তমানের সকল ওয়েব সাইটে মোবাইল ফ্রেন্ড হওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
আপনার ওয়েবসাইটটি যদি মোবাইল বান্ধব না হয়ে থাকে এবং আপনার ওয়েবসাইটের তথ্যসমূহ যদি মোবাইলে সম্পূর্ণরূপে না দেখায়। তাহলে, গুগল কোনোভাবেই আপনার ওয়েবসাইটটি ইন্ডেক্স করবে না সুতরাং আপনাকে অবশ্যই একটি মোবাইল বান্ধব থিম ব্যবহার করতে হবে।
বর্তমানে যে সকল থিম পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই মোবাইল বন্ধ। তবে এখনো অনেক থিম পাওয়া যায় যেগুলো কম্পিউটারে সঠিকভাবে প্রদর্শিত হলেও মোবাইল ডিভাইসে সঠিকভাবে প্রদর্শন করে না ।
আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল বন্ধ কিনা তা নিশ্চিত করতে আপনার ওয়েবসাইট একটি মোবাইলের মাধ্যমে ভিসিট করে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পারেন। এছাড়াও গুগলের মোবাইল ফ্রেন্ডলি টেস্ট নামক একটি টুল আছে যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল বান্ধব কিনা তা চেক করতে পারবেন।
গুগল মোবাইল ফ্রেন্ডলি টেস্ট টুলের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটটি পরীক্ষা করতে সর্বপ্রথম এই টুলটির হোমপেজে ভিজিট করুন। এবার আপনার ওয়েবসাইটের ইউআরএলটি দিয়ে টেস্ট বাটনে ক্লিক করুন।
আপনার ওয়েবসাইটটি যদি মোবাইল বাধ্য হয়ে থাকে তাহলে উপরের টেস্ট বাটনটিতে ক্লিক করলে কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার স্ক্রীনে একটি সবুজ টিক চিহ্ন সহ "Page is usable on mobile" লেখাটি দেখতে পাবেন। অন্যথায়, আপনার ওয়েবসাইটে যদি কোন ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে তাও দেখতে পাবেন।
সাইটের লোডিং স্পীড বাড়ানোর চেষ্টা করুন
সর্বশেষ আমরা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হলো ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড। একটা জিনিশ ভাবুন তো, আপনি কি ব্যক্তিগতভাবে ধীরগতিতে লোডিং নেয় এমন ওয়েবসাইটকে পছন্দ করেন? ঠিক তেমনি গুগলেও কোন ধীর গতির ওয়েবসাইটকে পছন্দ করেনা।
আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ঠিক আছে কিনা তা চেক করার জন্য গুগোল পেজ স্পিড ইন্সাইট টুলটি ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম প্রতি তিন সেকেন্ডের বেশি হয় তাহলে ধরে নিতে হবে যে আপনার ওয়েবসাইটের স্পিড খুবই কম। এবং আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের স্পিড বাড়াতে এবং লোডিং টাইম কমাতে হবে।
আপনি যদি ব্লগার এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করে থাকেন তাহলে একটি ভালো মানের থিম ব্যবহার করার মাধ্যমে খুব সহজে আপনার ওয়েব সাইট এর স্পিড বাড়াতে পারবেন। এছাড়াও ওয়াডপ্রেস ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি বিভিন্ন ধরনের স্পিড অপটিমাইজেশন প্লাগিন ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটে AMP ব্যবহার করতে পারবেন । AMP মূলত এমন একটি ফ্রেমওয়ার্ক যার মাধ্যমে দ্রুতগতির মোবাইল পেজ মোবাইল পেজ (Accelerated Mobile Page) তৈরি করা হয়। এবং এটি গুগোল দ্বারা সমর্থিত।
উপসংহার
তো বন্ধুরা এই ছিল কিভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটটিকে গুগলে দ্রুত ইন্ডেক্স করাবেন সে বিষয়ে একটি সম্পূর্ণ নির্দেশনা। মোট কথা হল আপনাকে সর্বপ্রথম বুঝতে হবে যে একটি ওয়েবসাইটের গুগলে ইনডেক্স হওয়া ঠিক কী কী বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এবং সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আপনি যখন জানতে পারবেন যে কোন কোন বিষয়ের ওপর গুগোল ইনডেক্সিং এর বিষয়টি নির্ভর করে। তখন আপনি খুব সহজে আপনার ওয়েবসাইটে ত্রুটি সমূহ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রহণ করতে পারবেন।
এক নজরে গুগলে দ্রুত পোস্ট ইনডেক্স করার ধাপসমূহ :
- ওয়েবসাইট সার্চ কনসোলে এড করুন
- robots.txt ফাইল এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন
- সাইটম্যাপ তৈরি করে সাবমিট করুন
- সঠিকভাবে মেটা ট্যাগ ব্যবহার করুন
- তথ্যবহুল পোস্ট লিখুন
- নিয়মিত পোষ্ট পাবলিশ করুন
- যথাযথ ইন্টার্নাল লিংক তৈরি করা
- সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন
- ব্যাকলিংক তৈরী করুন
- মোবাইল বান্ধব থিম ব্যবহার করুন
- সাইটের লোডিং স্পীড বাড়ানোর চেষ্টা করুন