ভিপিএন (VPN) কি? কেন ভিপিএন ব্যবহার করা হয়?

দিন যত যাচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ততোই বাড়ছে।  আর সেই সাথে বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি। যা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের আর্থিক এবং মানসিক ক্ষতির কারণ হচ্ছে। 

যেহেতু আধুনিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবস্থা। তাই ইন্টারনেট ছাড়া বর্তমান পৃথিবীতে জীবন-যাপন করার চিন্তা করাটাও এক প্রকার বোকামি। 

তবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা যদি অসাধু ব্যক্তিদের কাছে আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য শেয়ার করে ফেলি তাহলে কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমাদের উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে। 

সুতরাং অবশ্যই আমাদের এমন কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে যার মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই অনলাইনে নিরাপদ থাকতে পারব এবং অসাধু ব্যক্তিরা চাইলেও আমাদের তথ্য  চুরি করতে পারবে না।  

আর এখান থেকেই মূলত ভিপিএন প্রযুক্তির উৎপত্তি, বন্ধুরা আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ভিপিএন সম্পর্কে জানা অজানা সকল তথ্য ভাগ করার চেষ্টা করব , এবং ভিপিএন ব্যবহার করে কীভাবে আপনি অনলাইনে সুরক্ষিত থাকবেন সে সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব। 

ভিপিএন (VPN) কি?

ভিপিএন  (VPN) এর পূর্ণরূপ হল (Virtual Private Network) যেটা বাংলা করলে দাঁড়ায় ব্যক্তিগত কাল্পনিক নেটওয়ার্ক।   সুতরাং এনাম থেকে বুঝতে পারছেন যে ভিপিএন মূলত এমন একটি প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক তৈরি করে ইন্টার্নেট ব্যবহার করতে পারবেন । 

ভিপিএন ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই দূরবর্তী সার্ভার এর সাথে এনক্রিপটেড টানেল এর মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন এবং  সেই সার্ভার ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজে আপনার পরিচিতি অনলাইনে গোপন রেখে  ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। 

ভিপিএন কিভাবে কাজ করে?

ভিপিএন এর প্রধান কাজ হচ্ছে তার ব্যবহারকারীকে ইন্টারনেটের সুরক্ষিত রাখা। এবং এই কাজটি করতে ভিপিএন মূলত তার ব্যবহারকারী এবং ভিপিএন সার্ভার এর মধ্যে একটি এনক্রিপটেড সংযোগ তৈরি করে। 

ব্যবহারকারী যখন ইন্টারনেট কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য আবেদন পাঠায়।  তখন ভিপিএন সেই এনক্রিপটেড সংযোগের মাধ্যমে রিকোয়েস্ট নিজের সার্ভারের কাছে পাঠায় এবং সার্ভার নিজের পরিচয় পুনরায় সেই ওয়েবসাইটের জন্য ইন্টারনেটে আবেদন পাঠান। 

পরবর্তীতে ইন্টারনেট থেকে সে ওয়েব সাইটের কনটেন্ট গুলো সার্ভার ডাউন লোড করে পুনরায় ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে পাঠিয়ে দেয়। এবং ঠিক এভাবেই একটি ভিপিএন তার ব্যবহারকারীকে উন্মুক্ত ইন্টারনেট থেকে রক্ষা করে থাকে।


উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ধরুন, আপনি বাজারে কিছু পণ্য কিনতে যাবেন তবে যেহেতু আপনি যদি সরাসরি বাজারে যান তাহলে সকলে আপনাকে দেখতে পাবে এবং আপনার সম্বন্ধে জানতে পারবে । 

তবে আপনি যদি আপনার বন্ধুকে আপনার জন্য বাজার করে আনতে বলেন আপনার পরিচয়টা সকলের কাছে উন্মুক্ত হবে না। 

আর ভিপিএন মূলত এখানে আপনার বন্ধুর কাজটাই করে। যেহুতু একটি ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হলে সর্বপ্রথম একটি রিকোয়েস্ট পাঠাতে হয়। এবং সে রিকোয়েস্ট সাথে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য থাকে সুতরাং আপনি যদি ভিপিএন ছাড়া কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন তাহলে খুব সহজেই আপনার তথ্যগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। 

কিন্তু আপনি যদি একটা ভিপিএন সার্ভার ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য শুধুমাত্র সেই সার্ভারের কাছেই থাকবে। এবং ভিপিএন সার্ভার তার নিজস্ব তথ্য দিয়ে এবং এনক্রিপটেড কানেকশনের মাধ্যমে আপনার জন্য  সেই ওয়েবসাইটটি লোড করবে। 

ভিপিএন এর প্রকারভেদ সমূহ 

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ভিপিএন সার্ভিস  ব্যবহার করা হয়। তবে একজন সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে আপনার মূলত তিন ধরনের ভিপিএন সম্পর্কে জানায় যথেষ্ট।  ভিপিএন এর এই তিন ধরনের ব্যবহার সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

এসএসএল (SSL) ভিপিএন 

যদিও এটি সাধারণ ভিপিএন মত কাজ করে না। তবে অন্যান্য ভিপিএন এর  মতোই এটারও মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীদের তথ্য যাতে কোনভাবে অসাধু ব্যক্তিদের হাতে চলে না যায় সেজন্য একটি এনক্রিপটেড কানেকশন তৈরি করা। 

আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন এবং কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন। তখন লক্ষ্য করলে তাহলে দেখতে পাবেন যে বেশিরভাগ ওয়েবসাইটের এড্রেসবার এর বাম পাশে একটি লকপ্যাড আইকন থাকে।  

তবে সকল ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে থাকবে এমনটা না কিন্তু অনেক ওয়েবসাইট আছে যেগুলো এসএসএল  কানেকশন ব্যবহার করে থাকে না । সেক্ষেত্রে আপনি যদি সেই ওয়েবসাইটে কোন ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করেন তাহলে একটি সম্ভাবনা থাকে যে আপনার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। 

সুতরাং, আপনি যদি কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন এবং ব্যক্তিগত কোনো তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই চেক করে নেবেন সে ওয়েবসাইটটিতে এসএসএল ভিপিএন ব্যবহার করা হয়েছে কিনা। 

একজন সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে এস এস এল  ভিপিএন সম্বন্ধে আপনার তেমন কোনো চিন্তা করতে হয় না। কেননা সাধারণত একজন ওয়েবসাইটের মালিক নিজ উদ্যোগে তার ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে এসএসসি সার্টিফিকেট ইন্সটল করে থাকেন। 

ভিপিএন এর প্রকারভেদ সমূহ 

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ভিপিএন সার্ভিস  ব্যবহার করা হয়। তবে একজন সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে আপনার মূলত তিন ধরনের ভিপিএন সম্পর্কে জানায় যথেষ্ট।  ভিপিএন এর এই তিন ধরনের ব্যবহার সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

এসএসএল (SSL) ভিপিএন 

যদিও এটি সাধারণ ভিপিএন মত কাজ করে না। তবে অন্যান্য ভিপিএন এর  মতোই এটারও মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীদের তথ্য যাতে কোনভাবে অসাধু ব্যক্তিদের হাতে চলে না যায় সেজন্য একটি এনক্রিপটেড কানেকশন তৈরি করা। 

আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন এবং কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন। তখন লক্ষ্য করলে তাহলে দেখতে পাবেন যে বেশিরভাগ ওয়েবসাইটের এড্রেসবার এর বাম পাশে একটি লকপ্যাড আইকন থাকে।  

তবে সকল ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে থাকবে এমনটা না কিন্তু অনেক ওয়েবসাইট আছে যেগুলো এসএসএল  কানেকশন ব্যবহার করে থাকে না । সেক্ষেত্রে আপনি যদি সেই ওয়েবসাইটে কোন ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করেন তাহলে একটি সম্ভাবনা থাকে যে আপনার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। 

সুতরাং, আপনি যদি কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন এবং ব্যক্তিগত কোনো তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই চেক করে নেবেন সে ওয়েবসাইটটিতে এসএসএল ভিপিএন ব্যবহার করা হয়েছে কিনা। 

একজন সাধারন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে এস এস এল  ভিপিএন সম্বন্ধে আপনার তেমন কোনো চিন্তা করতে হয় না। কেননা সাধারণত একজন ওয়েবসাইটের মালিক নিজ উদ্যোগে তার ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে এস এস এল সার্টিফিকেট ইন্সটল করে থাকেন। 

সাইট-থেকে-সাইট ভিপিএন (Site-To-Site VPN)

দুইটি সাইটের মধ্যে সুরক্ষিত উপায় তথ্য আদান প্রদানের লক্ষ্যে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তাকে মূলত সাইট থেকে সাইট ভিপিএন বলা হয়। এবং এই সকল ভিপিএন মূলত খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহকারী সাইটে ব্যবহার করা হয়ে থাকে । 

উদাহরণস্বরূপ আপনি যখন কোন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট পণ্য ক্রয় করেন এবং মূল্য পরিশোধ করেন তখন যদি আপনি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পাবেন যে বেশিরভাগ ওয়েবসাইটের তৃতীয় পক্ষ ওয়েবসাইটকে পেমেন্ট প্রক্রিয়াজাতকারী হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

এবং এই কাজটি সম্পন্ন করতে দুটি ওয়েবসাইটের মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন আপনার ব্যাংক একাউন্ট তথ্য ক্রেডিট কার্ড নাম্বার ইত্যাদি আদান-প্রদান করতে হয়। 

সুতরাং এ কাজের জন্য একটি নিরাপদ নেটওয়ার্ক প্রয়োজন হয়। আর এই নিরাপদ নেটওয়ার্কে মূলত site-to-site ভিপিএন কানেকশন বলা হয়। 

ব্যবহারকারী থেকে সার্ভার ভিপিএন (Client-To-Server VPN)

সাধারণ ব্যবহারকারী উন্মুক্ত ইন্টারনেট নিরাপদ থাকার জন্য যে ধরনের ভিপিএন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকে মূলত তাকেই ক্লায়েন্ট সার্ভার ভিপিএন বলা হয়। 

এবং স্বাভাবিকভাবে ভিপিএন শব্দটি ব্যবহার করলে আমরা ক্লায়েন্ট সার্ভার ভিপিএন কে বসে থাকি কেননা এটি সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং সবচেয়ে কার্যকারী মাধ্যমে একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে নিরাপত্তা দেবার ব্যাপারে । 

সাধারণত এ ধরনের ভিপিএন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয় যখন কোন ব্যবহারকারী তার ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে প্রকাশ হতে দিতে চাই না। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আপনি যখন কোনো পাবলিক প্লেসে আপনার কম্পিউটারটি ওয়াইফাই এর সাথে কানেক্ট করেন তখন কিন্তু আপনি জানেন না যে ঠিক কি ধরনের ব্যক্তি এই রাউটারটির নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং তিনি কি আসলে অসৎ উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা দিচ্ছে কিনা । 

অধিকাংশ সময় এই ধরনের পরিস্থিতিতে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য অন্যের হাতে যাওয়া হতে বিরত রাখার জন্যই মূলত ক্লায়েন্ট সার্ভার ভিপিএন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

ভিপিএন কেন ব্যবহার করা হয় 

আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি অনেকটাই বুঝতে পারছেন যে ভিপিএন ব্যবহার করার মূল উদ্দেশ্য কি। তো বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার করার জন্য আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলাম।  

ধরুন একজন ব্যক্তি কোন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে তার পছন্দের পণ্যটি ক্রয় করে তার ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করল। অথবা একজন ব্যক্তির নিত্যদিনের হিসাব তার অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম এর মাধ্যমে পরিচালনা করেন। 

তবে যেহেতু বর্তমান সময়ে অনলাইন অপরাধের বিষয়টি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সুতরাং এখানে একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কোন অসাধু ব্যক্তি সেই ব্যক্তি নেটওয়ার্ক করে তার ব্যাংকিং তথ্য আত্মসাৎ করবে। 

মূলত এ সকল অবস্থায় নিরাপদ উপায় অনলাইনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিরাপদে আদান প্রদান করার ক্ষেত্রে ভিপিএন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

আপনার কি ভিপিএন ব্যবহার করা উচিত 

আপনি যদি ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার একটি ভিপিএন কানেকশন ব্যাবহার করা উচিত। 

কেননা আপনি যখন ইন্টারনেটের সাথে কানেক্টেড হন তখন আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার আপনাকে ইন্টারনেটের সাথে কানেকশন তৈরি করে দেয়। এবং আপনাকে একটি আইপি অ্যাড্রেস এর মাধ্যমে সনাক্ত করে। 

এমতাবস্থায় আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার চাইলেই কিন্তু আপনার ব্রাউজিং হিস্টরি সহ ইন্টারনেটে আদান-প্রদান করা সকল তথ্য দেখতে পারবে। 

আর এ কারণেই এখানে একটি সম্ভাবনা থেকেই যায় যে তিনি হয়তোবা কিছু টাকার বিনিময়ে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সমূহ বিজ্ঞাপন দাতাদের কাছে অথবা অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের কাছে কি করে দিবেন। 

তবে আপনার মনে হতে পারে যে আমার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার তো অনেক বিশ্বস্ত। কিন্তু এখানে আরো একটি সম্ভাবনা আছে আর তা হলো আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এর ট্রাকিং ডাটাবেজ সাইবার অপরাধীদের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। 

এছাড়াও আপনি যদি কোন পাবলিক প্লেসে ওয়াইফাই এর সাথে আপনার ডিভাইসটি সংযুক্ত করে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে আপনি কোনোভাবেই জানতেই পারবেননা যে কোন ব্যাক্তি আপনার তথ্যের ওপর নজরদারি করছে। 

সুতরাং সবশেষে বলতে পারি আপনি যদি কোনো ব্যক্তিগত এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হরহামেশাই অনলাইনে শেয়ার করে থাকেন।  তাহলে অবশ্যই আপনার একটি ভিপিএন সদ্ব্যবহার করা উচিত।  

যেভাবে ভিপিএন ব্যবহার করবেন 

ভিপিএন ব্যবহার করা বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যেমন আপনি চাইলে আপনার ডিভাইসে ভিপিএন পয়েন্ট ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারবেন অথবা আপনি চাইলে আপনার রাউটারের ভিপিএন ইন্সটল করতে পারবেন। নিম্নে কি কি উপায়ে ভিপিএন ব্যবহার করা যায় তা বর্ণনা করা হলো । 

ক্লায়েন্ট এর মাধ্যমে ভিপিএন ব্যবহার

ডিভাইস পর্যায়ে ভিপিএন ব্যবহার করার জন্য ভিপিএন ক্লায়েন্টের ব্যবহার খুবই জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। আপনার কম্পিউটার অথবা মোবাইলে ভিপিএন ব্যবহার করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে।

এবং আপনি যে কোম্পানির ভিপিএন কানেকশন ব্যবহার করছেন ঠিক সেই কোম্পানির দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী জিটিএন ক্লায়েন্ট সফটওয়্যারটি আপনার কম্পিউটার অথবা মোবাইলের সাথে সংযুক্ত সংযুক্ত করে নিতে হবে। 

এ পদ্ধতিতে শুধুমাত্র আপনি যে ডিভাইসে ভিপিএন ক্লায়েন্ট সফটওয়্যারটি ব্যবহার করবেন শুধুমাত্র সেই ডিভাইসের মাধ্যমে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। 

ব্রাউজার এক্সটেনশন এর মাধ্যমে ভিপিএন ব্যবহার 

বর্তমানে আরেকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে ব্রাউজার এক্সটেনশন এর মাধ্যমে ভিপিএন ব্যবহার করা। বর্তমানে গুগল ক্রোম মজিলা ফায়ারফক্স অপেরা মিনি প্রায় সকল ব্রাউজার এক্সটেনশন সাপোর্ট করে থাকে।

এক্সটেনশন মূলত এমন একটি ক্ষুদ্র সফটওয়্যার যার মাধ্যমে আপনার ব্রাউজার এর নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করতে পারেন।  মূলত এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আপনি চাইলে আপনার নির্দিষ্ট একটি ব্রাউজারের জন্য ভিপিএন ক্লায়েন্ট সেটাপ করে নিতে পারবেন। এবং এই ভিপিএন কানেকশন টা শুধুমাত্র আপনার সেই ব্রাউজারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। 

ব্রাউজার এক্সটেনশন এর মাধ্যমে ভিপিএন ব্যবহার করতে আপনার ব্রাউজারের জন্য নির্ধারিত এক্সটেনশন স্টরে ভিজিট করুন । এবং আপনি যে কোম্পানির ভিপিএন ভিপিএন এক্সটেনশনটি ইনস্টল করে কানেক্ট করে নিন। 

রাউটার ভিপিএন ব্যবহার করে 

আপনার ব্যবহৃত সকল ডিভাইসকে সুরক্ষিত করতে রাউটার ভিপিএন খুবই ভালো একটি মাধ্যম। এ পদ্ধতিতে সরাসরি আপনার রাউটারে কনফিগার করা হয়ে থাকে। 

এবং পরবর্তীতে আপনি যদি কোন ডিভাইস আপনার রাউটারের সাথে কানেক্ট করে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাহলে আপনার সেই ডিভাইসটিও ভিপিএন এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্লাউজ করবে।

ভিপিএন কি সত্যিই সুরক্ষিত 

একটা কথা সবসময় মনে রাখতে হবে যে ভিপিএন শুধুমাত্র আপনাকে একটি কানেকশনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট করে। এই প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে একটা ভালো মানের ভিপিএন অবশ্যই সুরক্ষিত।

তবে আপনি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন অপরিচিত ওয়েবসাইটে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে ব্রিটেন কোন ভাবে আপনাকে রক্ষা করতে পারবে না। তবে ভিপিএন সাধারণত ফিশিং সাইট গুলোকে তারা ডাটাবেজে থাকা তথ্য অনুযায়ী ব্লক করে থাকে। 

স্যার আপনি যদি শুধুমাত্র ভিপিএন ব্যবহার করেন এবং আপনার কম্পিউটারে কোন ধরনের ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার না থাকেন তাহলে এখানে একটি সম্ভাবনা থেকেই যায় যে আপনার কম্পিউটারটি অচিরেই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। 

উপসংহার

তো বন্ধুরা এই ছিল ভিপিএন কি ভিপিএন কেন ব্যবহার করা হয় এবং কিভাবে আপনি আপনার ডিভাইসে ভিপিএন ব্যবহার করতে পারবেন সে বিষয়ে একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা। 

ভিপিএন মূলত এমন এক ধরনের সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার এর সমন্বয় যার মাধ্যমে একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কে তার ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষা করার জন্য একটি কাল্পনিক এনক্রিপ্টেড নেটওয়ার্ক তৈরি করে দেয়া হয়। 

এবং ভিপিএন মূলত ব্যবহার করা হয়ে থাকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অবস্থান সহ অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য ব্যক্তির হাতে চলে না যায় তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে । 

বিভিন্ন উপায়ে ভিপিএন ব্যবহার করা যায় যেমন একটি ডিভাইস ভিত্তিক ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার ইন্সটল করার মাধ্যমে এছাড়াও একটি ব্রাউজারে টেনশন এর মাধ্যমে। তবে আপনি চাইলে আপনার রাউটারের মাধ্যমে ভিপিএন ব্যবহার করতে পারবেন। 

তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন ইন্টারনেট জগতে চেতনা তার কোনো বিকল্প নেই। এবং আপনি যদি নিজে থেকে সচেতন না হয় তাহলে কোন ধরনের ভিপিএন কিংবা অন্য কোনো মাধ্যম নেই যে আপনাকে ইন্টারনেটে সুরক্ষিত রাখতে পারবে।

সুতরাং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন কর করার চেষ্টা করুন সর্বোপরি সচেতন থাকার চেষ্টা করুন এবং উপস্থিত বুদ্ধি কে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন। 

ধন্যবাদ! পোস্টটি তথ্য বহুল মনে হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং ভবিষ্যতে এধরনের পোষ্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url