বাংলাদেশে মোবাইল ট্যাক্স কত ? বিদেশ থেকে মোবাইল আনার উপায়

বিদেশ থেকে মোবাইল আনার শুল্ক কত , আমদানি শুল্কের তালিকা ,

 বিদেশ থেকে মোবাইল আনার ট্যাক্স :

আপনারা যারা বিদেশ থেকে দেশে মোবাইল আনতে ইচ্ছুক আজকের পোস্টটি তাদের জন্য। আজকের এই পোস্ট এ আমি আপনাদের জানাবো বিদেশ থেকে মোবাইল আনতে বাংলাদেশ সরকার কে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হয় এবং বাংলাদেশ কাস্টমস এর কোন কোন নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয়। 

আপনি যদি বাইরের দেশ থেকে বৈধ উপায়ে মোবাইল আনতে চান তাহলে অবশই আপনাকে বাংলাদেশ সরকারকে কর প্রদানের মাধ্যমে আপনার মোবাইলে এর IMEI নম্বরটি BTRC এর সার্ভারে রেজিস্ট্রেশান করাতে হবে। 

কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যে বিদেশ থেকে মোবাইল আনার সঠিক নিয়ম কানুন এবং ট্যাক্স এর সঠিক পরিমাণ না জানার কারণে অনেক ভোগান্তিতে পরেন। আর এ কারণেই আজকের এই পোস্টে আমি আলোচনা করব কিভাবে এবং কোন কোন নিয়ম অনুসরণ করে বিদেশ থেকে মোবাইল আনতে পারবেন। 

বিদেশ থেকে মোবাইল আনার খরচ কত ?

সাধারণত, বিদেশ থেকে মোবাইল আনার খরচ নির্ভর করে সেই মোবাইলটির দামের উপরে। বাংলাদেশ কাস্টম এর নিয়ম অনুযায়ী একটি মোবাইল বাংলাদেশে আনতে হলে সেই মোবাইলের বাজার মূল্যের ৫৭% কর বাংলাদেশ সরকারকে দিয়ে মোবাইলের আই এম ই আই নম্বরটি বিটিআরসি এর সার্ভারে রেজিস্ট্রেশান করাতে হবে। 

অর্থাৎ, আপনি যদি একটি ১০,০০০ টাকা দামের মোবাইল বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আনতে চান তাহলে বাংলাদেশ সরকারকে ৫,৭০০ টাকা কর দিতে হবে। এবং আপনি যদি ২০,০০০ টাকা দামের মোবাইল আনতে চান তাহলে কর দিতে হবে ১১,৪০০ টাকা।  

আর আপনি যদি ভাবেন যে আপনি এই ৫৭% ট্যাক্স দিয়েই পার পেয়ে যাবেন তাহল আপনি ভুল ভাবছেন। বাংলাদেশ কাস্টম এর নিয়ম অনুসারে যেকোনো ধরনের বিপদজনক পণ্য বিমানে পরিবহন করলে ১০০ ডলার সমপরিমান জরিমানা বাংলাদেশ কাস্টমকে দিতে হবে। আর ১০০ ডলার এর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৯,৫০০ টাকা। 

সুতরাং একটি ১০,০০০ টাকা সমমূল্যের মোবাইল বাংলাদেশে বৈধভাবে আনতে আপনার প্রায় ২৫,০০০ টাকা খরচ হবে। তবে আমি এখানে শিপিং খরচ এবং পাচকেজিং খরচ বাদ দিয়েছি। সুতরাং আপনি কোন মাধ্যমে আপনার মোবাইলটি আনছেন তার উপরেও এর খরচ অনেকটাই নির্ভর করছে।

কিন্তু আপনি যদি জানেন যে কিভাবে সঠিক উপায় এ বিদেশ থেকে মোবাইল আনতে হয় তাহলে আপনি খুব সহজেই কোন প্রকার ট্যাক্স না দিয়েই সম্পূর্ণ বৈধ উপায়ে বিদেশ থেকে মোবাইল আনতে পারবেন। 

বিদেশ থেকে মোবাইল আনার সঠিক নিয়ম :

সাধারণত বাংলাদেশে মোবাইল আনা হয় কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে এবং উপরিক্ত নিয়ম কানুনগুলো কুরির সার্ভিস এর মাধ্যমে আনা মোবাইলগুলোর উপরই কার্যকর। তাই আপনি যদি ভবেন যে কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে আপনার মোবাইল বিদেশ থেকে আনাবেল তাহলে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আপনি বাজেভাবে ফাঁসতে চলেছেন। 

কিন্তু, বাংলাদেশ কাস্টমস এর অফিসিয়াল নিয়ম অনুসারে একজন ব্যাক্তি তিনটি মোবাইল কোনরকম ট্যাক্স ফী ছাড়াই বাংলাদেশে আনতে পারবেন। এবং আপনার মোবাইল এর ব্যাটারি এর জন্যেও কোন ধরনের জরিমনা দিতে হবে না। 

সুররাং আপনি যদি বিদেশ থেকে কোন মোবাইল দেশে আনতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত কারো মাধ্যমে আনার চেষ্টা করবেন। আর যারা প্রবাসী আছেন তারা যদি নিজের কাছের কাউকে মোবাইল ফোন উপহার দিতে চান তাহলে আপনার পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে দেশে পাঠাতে পারেন। 

একজন ব্যাক্তি সর্বচ্চ কয়টি মোবাইল বাংলাদেশে আনতে পাবেন ? 

বাংলাদেশ কাস্টমস একজন ব্যাক্তির বিদেশ থেকে মোবাইল আনার ওপরেও সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ করে দিয়েছে।একজন ব্যাক্তি ইচ্ছে করলে সর্বচ্চ ৮ টি মোবাইল বহন করতে পারে। 

এই ৮ টি মোবাইলের প্রথম তিনটিতে কোন ধরনের ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে না। কিন্তু পরবর্তী ৫ টি মোবাইল এর জন্যে বাধ্যতামূলক কর পরিশোধ করতে হবে। 

আর ১৩ বছরে নিচের সকলকেই শিশু বলে গণ্য করা হবে এবং তারা একটাও মোবাইল বহন করতে পারবে না। 

শেষ কথা :

তো বন্ধুরা এই ছিল বিদেশ থেকে মোবাইল আনার ট্যাক্স এবং বাংলাদেশ কাস্টমস এর নিয়মকানুন সমূহ। আর আমি সবসময়ই বলব যে আপনি কখনোই আলিবাবা আমাজন এর মত বিদেশি ই কমার্স প্লাটফরমগুলো থেকে মোবাইল কিনবেন না। 

কারণ এই সকল বিদেশি ই কমার্স প্লাটফরমগুলো থেকে মোবাইল কিনলে প্রথমত আপনাকে মোবাইল ফোনটি দেশে আনতে অনেক টাকা খরচ করতে হবে। দ্বিতীয়ত আপনার মোবাইলের যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে অফিসিয়াল সাপোর্ট পাবেন না। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url